আরও দেখুন
মঙ্গলবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য ওঠানামা পরিলক্ষিত হয়েছে—এই পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখীও হয়েছে, আবার নিম্নমুখীও হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, সারাদিনজুড়ে এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল, যদিও তা সর্বোচ্চ মাত্রার ছিল। এমনকি সকালের দিকে ইউরোজোন থেকে প্রকাশিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের ফলাফল ইউরোর দরপতন ঘটাতে পারত, কারণ ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকগুলোর ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ছিল—তবুও ট্রেডারদের দৃষ্টি অন্যান্য দিকে ছিল, এবং এই প্রতিবেদনগুলো একরকম উপেক্ষিতই হয়। মার্কেটের ট্রেডাররা মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিতব্য নন-ফার্ম পে-রোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকে মনোযোগ দিয়েছিল। যখন এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হয়, তখন মার্কেটের ট্রেডাররা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
সংক্ষেপে, নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪.৬%-এ পৌঁছায়, যা পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। একইসাথে, নন-ফার্ম পে-রোল প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রত্যাশা অতিক্রম করে কর্মসংস্থান ৬০,০০০ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু এটিকে শক্তিশালী ফলাফল বলা যায় না। অক্টোবর মাসের প্রতিবেদনে কর্মসংস্থান ১,০৫,০০০ হ্রাস পেয়েছে, এবং সেপ্টেম্বরের সংশোধিত ফলাফল অনুযায়ী কর্মসংস্থান ১,০৮,০০০ বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কিন শ্রমবাজার সম্পর্কিত এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, এবং এ কারণেই এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডলারের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। এই দরপতনকে টেকনিক্যাল কারেকশনও বলা যেতে পারে। তবে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য—1.1400-1.1830-এর মধ্যে যে সাইডওয়েজ চ্যানেল রয়েছে, এই পেয়ারের মূল্য সেই চ্যানেলের উপরের সীমানায় পৌঁছেছে। সুতরাং টেকনিক্যাল কারণে এই পেয়ারের দীর্ঘমেয়াদি দরপতনের সূচনা হতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম মঙ্গলবার শুধুমাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনজুড়ে এই পেয়ারের মূল্য 1.1745-1.1754 এরিয়া ব্রেক করার চেষ্টা করছিল এবং মার্কিন সেশনের সময় এই ব্রেকআউট সফল হয়। এরপর এই পেয়ারের মূল্য বাড়তে থাকে এবং প্রায় নিকটতম লক্ষ্যমাত্রা 1.1808 পর্যন্ত পৌঁছায়। তবে দিনশেষে সেখান থেকে এই পেয়ারের মূল্য পুনরায় আগের অবস্থানে ফিরে আসে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গঠিত হচ্ছে, যদিও গত সপ্তাহে মূল্য ট্রেন্ড লাইন অতিক্রম করেছিল। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এখনও মার্কিন ডলারের দরপতনের সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে এই পেয়ারের মূল্যের আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করা যায়। তবে বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্য 1.1400-1.1830 চ্যানেলের উপরের লাইনে পৌঁছেছে, তাই এখন মূল্য হয় এই লাইন অতিক্রম করবে, না হয় এই ফ্ল্যাট রেঞ্জের মধ্যেই অবস্থান করবে।
বুধবার নতুন ট্রেডাররা পুনরায় 1.1745-1.1754 এরিয়া থেকে ট্রেড করার চেষ্টা করতে পারেন। যদি এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট হয়, তাহলে মূল্যের 1.1655-1.1666-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে শর্ট পজিশন ওপেন করা যেতে পারে। অন্যদিকে, এই পেয়ারের মূল্য এই এরিয়া ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হলে মূল্যের 1.1808-এর দিকে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে লং পজিশন ওপেন করার সিগন্যাল পাওয়া যাবে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী বিবেচনাযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো 1.1354-1.1363, 1.1413, 1.1455-1.1474, 1.1527-1.1531, 1.1550, 1.1584-1.1591, 1.1655-1.1666, 1.1745-1.1754, 1.1808, 1.1851, 1.1908, এবং 1.1970-1.1988। বুধবার ইউরোজোনে নভেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে, যদিও এটি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হয়। অপরদিকে, আজকের অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না, ফলে আজ এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।