আরও দেখুন
আজ ফেডারেল রিজার্ভ টানা তৃতীয়বারের মতো সুদের হার কমাতে যাচ্ছে—এমন প্রত্যাশার প্রেক্ষাপটে মার্কিন ডলার চাপের মধ্যে রয়েছে। তবে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, সুদের হার কমানোর পর ফেড 'অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের' অবস্থান গ্রহণ করতে পারে, যে ঘোষণা বৈঠক-পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারে। স্থায়ী মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে উদ্বেগ মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রচণ্ড বিভাজনের জন্ম দিয়েছে, যার কারণে ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল আগামী বছরের শুরুতে নতুন কোনো পদক্ষেপের ঘোষণা নাও দিতে পারেন।
এই ধরনের পরিস্থিতি ডলারের মূল্যের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। সাধারণত সুদের হার হ্রাস করা হলে সেটি যেকোনো কারেন্সিকে দুর্বল করে—কারণ এতে সংশ্লিষ্ট অ্যাসেট বিনিয়োগকারীদের কাছে কম আকর্ষণীয় হয়ে পড়ে। তবে, যদি ফেড সত্যিই নিরপেক্ষ ও সতর্ক অবস্থানে গ্রহণ করে, তাহলে তা ডলারকে স্থিতিশীল করতে বা এমনকি কিছুটা শক্তিশালী করতেও পারে।
একই সঙ্গে, মুদ্রাস্ফীতি ও শ্রমবাজার নিয়ে ফেডের অভ্যন্তরীণ বিভাজন মার্কেটের সার্বিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়াচ্ছে। যদি ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির কিছু সদস্য আরও কঠোর নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দেন, তবে এর ফলে পাওয়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে এবং নতুন করে নীতিমালা নমনীয়করণের সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়বে। এর প্রভাবে স্বল্পমেয়াদে ডলারের মূল্যের অপ্রত্যাশিত ওঠানামা দেখা দিতে পারে। তাই ট্রেডারদের জেরোম পাওয়েলের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে—সেখানে ফেড ভবিষ্যতে কী পরিকল্পনা করছে সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ মুদ্রানীতির ইঙ্গিত—এই দুটো বিষয় আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
এই শরৎকালে ফেড দুইবার সুদের হার কমিয়েছে এবং গত ১৫ মাসে মোট ১.৫ শতাংশ হারে সুদের হার হ্রাস করেছে। বাড়তি আরও একবার সুদের হার কমানো হলে মার্কিন অর্থনীতিকে উদ্দীপিত করতে সহায়ক এমন এক স্তরের কাছাকাছি নিয়ে আসছে—যা অনেক কর্মকর্তার মতে, এখনই এড়িয়ে চলা উচিত। কিছু নীতিনির্ধারক মনে করছেন, তারা ইতিমধ্যেই সুদের হার এমন একটি মাত্রায় নিয়ে গেছেন, যা কঠোরও নয় নমনীয়ও নয়। এই সুদের হার আসলে কতটা কাজে লাগচগে, তা নিয়ে ভিন্নমতের কারণে নতুন করে বিভাজন দেখা দিতে পারে।
পাওয়েলের জন্য ঐক্যমতে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে উঠেছে, কারণ এখনও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি—যার মূল কারণ হচ্ছে অক্টোবর ও নভেম্বরে টানা সরকারি শাটডাউন। নভেম্বর মাসের শ্রমবাজার সংক্রান্ত সরকারি প্রতিবেদন ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ পাবে, আর মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে তার দুই দিন পরে। ফলে ফেড এখন একপ্রকার সূক্ষ্ম ভারসাম্যের মধ্যে অবস্থান করছে।
EUR/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র:
এই পেয়ারের ক্রেতাদের এখন মূল্যকে 1.1650 লেভেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য মনোযোগ দিতে হবে। কেবল এই লেভেল অতিক্রম করতে পারলেই এই পেয়ারের মূল্যের 1.1680 লেভেলে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে। সেখান থেকে 1.1705 পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে—তবে বড় ট্রেডারদের সহায়তা ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। এই মুভমেন্টের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.1725 লেভেল। যদি এই পেয়ার দরপতনের শিকার হয়ে 1.1620 লেভেলে নেমে আসে, তবে আমি প্রত্যাশা করব বড় ক্রেতারা সক্রিয় হবে। যদি মূল্য এই লেভেলে থাকা অবস্থায় ক্রেতারা না সক্রিয় হয়, তাহলে 1.1590 লেভেলের নিচে নতুন কোন লেভেলে নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা কিংবা 1.1570 থেকে লং পজিশন ওপেন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
GBP/USD-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র:
পাউন্ডের ক্রেতাদের এখন মূল্যকে 1.3320 এরিয়ায় থাকা নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স লেভেলে নিয়ে আসতে হবে। কেবলই তাহলে এই পেয়ারের মূল্য 1.3350-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে অগ্রসর হতে পারে—আর এই লেভেল ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হওয়া বেশ কঠিন হবে। স্বল্পমেয়াদে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা থাকবে 1.3380-এর লেভেল।
যদি এই পেয়ারের দরপতন ঘটে, তাহলে মূল্য 1.3285 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তাহলে মূল্য এই রেঞ্জ ব্রেকডাউন করে নিম্নমুখী হলে সেটি ক্রেতাদের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3260 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, এমনকি আরও নিচে 1.3230 লেভেল পর্যন্ত দরপতনের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।