empty
 
 
13.10.2025 10:53 AM
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে

ইউরো ও ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে, অপরদিকে মার্কিন ডলার দরপতনের শিকার হচ্ছে।

যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন রবিবার চীনের সঙ্গে পুনরায় বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমিত করতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, তারপরও কারেন্সি ট্রেডাররা এখনো সতর্ক অবস্থান বজায় রেখেছে, এমনকি যখন মার্কিন স্টক মার্কেটে স্থিতিশীলতার প্রাথমিক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স বেইজিংকে অনুরোধ করেছেন যেন বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে দেশটি একটি যৌক্তিক পথ গ্রহণ করে। তিনি বলেন, যদি বাণিজ্য সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে ট্রাম্পের কূটনৈতিক সক্ষমতা আরও বাড়বে। পরে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে সম্ভাব্য আপসের ইঙ্গিত দেন, কিন্তু পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেন যে পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ চীনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ট্রাম্প উল্লেখ করেন, "চীনকে নিয়ে চিন্তা করবেন না—সব ঠিক হয়ে যাবে! সম্মানিত চেয়ারম্যান শি সম্প্রতি কঠিন সময় পার করেছেন। তিনি নিজের দেশে অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে আসতে চান না, আমিও তা চাই না। যুক্তরাষ্ট্র চীনকে সাহায্য করতে চায়, ক্ষতি করতে নয়!"

This image is no longer relevant

ভ্যান্স ও ট্রাম্পের বিবৃতিগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বাণিজ্য সংঘর্ষ পুনরায় তীব্রতর হওয়ার কারণে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটেছে এবং ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটে ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, বাণিজ্য উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকলে বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্দার মুখে পড়তে পারে।

যেখানে ভ্যান্স সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান, ট্রাম্প সেখানে অপেক্ষাকৃত কঠিন অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আপসের ইঙ্গিত অনেকেই ইতিবাচক বলে গ্রহণ করলেও, চীনের প্রতি তাঁর সতর্কবার্তা ইঙ্গিত দেয় তিনি দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।

বিশ্লেষকদের মতে, দুই পক্ষই বাণিজ্যযুদ্ধের চড়া মূল্য সম্পর্কে সচেতন। বিশেষ করে চীন, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হ্রাস পেলে দেশটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্থরতা এবং কর্মসংস্থানে সংকটের সম্মুখীন হতে পারে।

ট্রাম্প ও ভ্যান্সের বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাম্প্রতিক বাণিজ্যভিত্তিক সিদ্ধান্তগুলো পরিবর্তনে চাপ দিয়ে যাবে, আবার একই সময়ে মার্কেটের বিচলিত বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতেও চাইছে যে এই উত্তেজনার আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনিবার্য নয়।

সর্বাধিক সম্ভাব্য দৃশ্যপট হলো, দুই পক্ষই এখন সবচেয়ে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে এবং মে মাসে নির্ধারিত নতুন শুল্ক আরোপের সময়সীমা আরও দীর্ঘস্থায়ীভাবে স্থগিত হতে পারে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, শুধু ডলারেরই দরপতন হয়নি—শুক্রবার স্টক মার্কেট, তেল এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপভাবে অ্যাসেট বিক্রির প্রবণতা দেখা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প হুমকি দেন যে, চীনের বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য পদক্ষেপের উত্তর দেওয়া হবে।

এর আগে, রবিবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্রকে উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি বন্ধ করতে হবে এবং অবশিষ্ট বাণিজ্য সমস্যার সমাধানে আরও আলোচনার প্রয়োজন।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, "প্রতিটি পদক্ষেপে উচ্চ শুল্কের হুমকি প্রদান চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার উপযুক্ত পথ নয়। যদি যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান অবস্থান অব্যাহত রাখতে, তবে চীন উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে দ্বিধা করবে না এবং নিজের আইনগত অধিকার রক্ষা করতে কঠোর অবস্থান নেবে।"

এই সবকিছু শুরু হয়েছিল গত সপ্তাহে, যখন চীন নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত পদক্ষেপ ঘোষণা করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, ট্রাম্প শুক্রবার ঘোষণা দেন যে, ১ নভেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের উপর 100% শুল্ক আরোপ করা, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের রপ্তানি সীমিত করা হবে এবং সম্ভবত চীনের জন্য বিমান উপাদান সরবরাহও স্থগিত হতে পারে।

যেমনটি আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, ফরেক্স মার্কেট—বিশেষত মার্কিন ডলার—এই ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে দরপতনের শিকার হয়েছে।

বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র: EUR/USD
এই মুহূর্তে ক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হবে এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1630 লেভেলে পুনরুদ্ধার করা। এই লেভেল নিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হলে পেয়ারটির মূল্য 1.1660 পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে। সেখান থেকে 1.1690-এ পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে, যদিও মার্কেটের বড় ট্রেডাররা সমর্থন ছাড়া এটি করা কঠিন হবে। উর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা হল 1.1720। যদি এই পেয়ারে মূল্য হ্রাস পায়, তবে মূল্য 1.1590 এরিয়ায় থাকা অবস্থায় ক্রেতারা সক্রিয় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদি সেখানে বড় কোনো ক্রেতা উপস্থিত না থাকে, তবে 1.1545-এর লেভেল টেস্ট করা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই উচিত অথবা 1.1510 লেভেল থেকে লং পজিশন ওপেন করার চিন্তা করা যেতে পারে।

বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র: GBP/USD
পাউন্ডের ক্রেতাদের জন্য প্রথম কাজ হবে 1.3360 লেভেলের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করানো। এই লেভেল নিশ্চিতভাবে ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হলে এই পেয়ারের মূল্যের লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.3390। এই লেভেল অতিক্রম করলে পরবর্তী ঊর্ধ্বমুখী লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে, যদিও সেখানে পৌঁছানো মূল্যের পক্ষে কঠিন হবে। চূড়ান্ত ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে 1.3425-এর লেভেল নির্ধারণ করা হয়েছে।
যদি এই পেয়ারের দরপতন হয়, তাহলে বিক্রেতারা সম্ভবত এই পেয়ারের মূল্যকে 1.3330 লেভেলে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। যদি তারা সফল হয়, তবে এই লেভেল ব্রেকআউট করে মূল্য নিম্নমুখী হলে সেটি ক্রেতাদের অবস্থানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্য 1.3290-এর দিকে চলে যাবে, এবং সেখান থেকে মূল্য আরও কমে 1.3260 পর্যন্ত যেতে পারে।

Recommended Stories

এখন কথা বলতে পারবেন না?
আপনার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন চ্যাট.